ইসরায়েল-ইরান সংঘাত: তেহরানে গণপলায়ন, ইসরায়েলি বিমানবন্দর বন্ধ – সর্বশেষ খবর

 



মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে: তেহরান থেকে গণপলায়ন, ইসরায়েলের আকাশপথ বন্ধ!

মেটা ডেসক্রিপশন (সর্বোচ্চ ১৫০ ক্যারেক্টারের মধ্যে): ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্র হওয়ায় তেহরান থেকে হাজার হাজার মানুষের গণপলায়ন। বিমানবন্দর বন্ধ, ট্রাম্পের বার্তা ও বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের সর্বশেষ খবর।


ইসরায়েল ইরান সংঘাত, তেহরান গণপলায়ন, ইসরায়েল বিমান হামলা, ইরান পারমাণবিক স্থাপনা, মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা, ইসরায়েলি বিমানবন্দর বন্ধ
Iran's capital Tehran


ভূমিকা: মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত নতুন মাত্রা লাভ করেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। সম্প্রতি ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার পর পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়েছে যে, ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা বিদেশে আটকে পড়া নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এই নাটকীয় পরিস্থিতির সর্বশেষ খবর এবং এর মানবিক ও আঞ্চলিক প্রভাব নিয়েই আমাদের আজকের এই আপডেট।


তেহরানের রাজপথে নীরবতা: গণপলায়নের চিত্র

প্রায় এক কোটি মানুষের আবাসস্থল তেহরান, যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বৃহৎ ও ব্যস্ত শহর। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের তীব্রতায় সেই তেহরান এখন জনশূন্য হতে শুরু করেছে।

  • ফাঁকা ডাউনটাউন: মঙ্গলবার (আপনার সাইটে প্রকাশের তারিখ অনুযায়ী দিনটি পরিবর্তন করতে পারেন), তেহরানের চিরচেনা ব্যস্ত ডাউনটাউন এলাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। বহু দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে।
  • ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড বাজার বন্ধ: ইউরোনিউজ জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির চূড়ান্ত পর্যায়ের পর এই প্রথমবার তেহরানের ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা স্পষ্ট করে।
  • সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার সকালে তেহরান শহরের কেন্দ্রে বসবাসরত প্রায় ৩,৩০,০০০ মানুষের জন্য আংশিকভাবে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করে। তবে, এর অনেক আগেই সাপ্তাহিক ছুটির সময়কার হামলার পর মানুষজন শহর ছাড়তে শুরু করেছিল।

গণপলায়নের কারণে তেহরান ছেড়ে যাওয়া রাস্তাগুলোতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। মানুষজন মূলত ক্যাস্পিয়ান সাগরের দিকে রওনা দিচ্ছে। গ্যাস স্টেশনগুলোতেও লম্বা লাইন দেখা গেছে, যেখানে বর্তমানে প্রতি গাড়িতে ২৫ লিটারের বেশি জ্বালানি নেওয়ার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: ট্রাম্পের বার্তা ও নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া

এই মানবিক সংকটের মাঝে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্যণীয়:

  • ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান: সোমবার পরবর্তী সময়ে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প Truth Social-এ একটি বার্তা পোস্ট করে তেহরান থেকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, "সবাইকে অবিলম্বে তেহরান ছেড়ে যেতে হবে।" পরে তিনি জানান, তিনি এই বিবৃতি দিয়েছেন কারণ "আমি শুধু চাই মানুষ নিরাপদ থাকুক।"
  • ইরানের কর্তৃপক্ষের দাবি: গণপলায়নের এই চিত্র সত্ত্বেও, ইরানি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করছেন। তবে, সাধারণ জনগণের জন্য কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা এখনও দেওয়া হয়নি, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে।
  • দেশগুলোর উদ্যোগ: ইসরায়েল থেকে সরিয়ে নেওয়া মানুষজনকে বহনকারী ফ্লাইট স্লোভাকিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রে অবতরণ করেছে, যা এই দেশগুলোকে প্রথম দিককার নাগরিক ফিরিয়ে আনা দেশগুলোর মধ্যে স্থান দিয়েছে। ভারতও তেহরান থেকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সরিয়ে নিয়েছে, যদিও তাদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।

ইসরায়েলের পরিস্থিতি: বিমানবন্দর বন্ধ ও ভ্রমণ সতর্কতা

ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও উত্তপ্ত।

  • বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ: গত শুক্রবার তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়, যখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
  • বিদেশে আটকে পড়া নাগরিক: ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৫০,০০০ ইসরায়েলি নাগরিক বিদেশে আটকে পড়েছেন, যদিও কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী সেই সংখ্যা ১,০০,০০০-র কাছাকাছি।
  • ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সতর্কতা: ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (National Security Council) বিদেশে আটকে পড়া নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা দ্রুত লারনাকা বা অ্যাথেন্সে ছুটে না যান, কারণ ইসরায়েলের আকাশপথ অনির্দিষ্টকালের জন্য আগমন ও প্রস্থান—দুটোর জন্যই বন্ধ রয়েছে।
  • স্থলপথে প্রবেশের সতর্কতা: পরিষদ নাগরিকদের আরও সতর্ক করে দিয়েছে, যাতে তারা জর্ডান বা মিশরের সিনাই উপদ্বীপ হয়ে স্থলপথে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা না করে। এই দুই দেশকেই এখন সর্বোচ্চ স্তরের (Level 4) ভ্রমণ সতর্কতার আওতায় আনা হয়েছে এবং সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তিদের দ্রুত বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উপসংহার: ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সামরিক অভিযানের পাল্টা-অভিযান, গণপলায়ন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ – এই সবকিছুই ইঙ্গিত দেয় যে পরিস্থিতি একটি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে। এই সংঘাতের চূড়ান্ত পরিণতি কী হবে তা বলা কঠিন, তবে এর মানবিক ও আঞ্চলিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে বাধ্য। 'দ্য যুক্তি জ্ঞান' এই পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে এবং সর্বশেষ তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই অঞ্চলে দ্রুত ফিরে আসুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।



🔗 Source: The Business Standard

📌  চোখ রাখুন The Yukti Gyan ব্লগে  এবং আমাদের YOUTUBE  চ্যানেলে  নিয়মিত আপডেট পেতে।

Post a Comment

Previous Post Next Post